North 24 Pargana District | জানুন আপনার নিজের জেলার ইতিহাস | Daily Gk 2022 For Govt Jobs

north-24-pargana-district

North 24 Pargana District | জানুন আপনার নিজের জেলার ইতিহাস | Daily Gk 2022 For Govt Jobs: The Administrative Headquarters of the district North 24-Parganas is Barasat. It comprises five Subdivisions.. Such as:  1. Barasat, 2. Barrackpore, 3. Bongaon, 4. Bashirhat, and 5. Bidhannagar. The district is connected with Nadia district in the north, as well as with South 24-Parganas in the south, Bangladesh is in the east of this district whereas, the Hooghly district, the River Hooghly, and Kolkata is situated in the west direction. North 24-Parganas District has an international border with Bangladesh in the east part. The length is about 230 Km. Its’ area is 4094 sq. Km. and the total population is 10009781 (2011 census) and the highest density with 2445 persons/ sq. Km. among all the districts in West Bengal.

 

 প্রেসিডেন্সি বিভাগ

[উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া ও নদিয়া এই পাঁচটি জেলা নিয়ে প্রেসিডেন্সি বিভাগ গঠিত]

North 24 Pargana District: উত্তর ২৪ পরগনা :

NORTH 24 PARGANAS, BARASAT NORTH 24 PARGANAS, BARASAT

 জেলার ইতিহাস 

 

বাংলার নবাব মিরজাফর ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে কলকাতার দক্ষিণে কুলপি পর্যন্ত ২৪টি জংলিমহল বা পরগনার জমিদারি সত্ত্ব ভোগ করার অধিকার দেন। এই ২৪টি পরগনা হল—

(১) আমীরপুর, (২) আকবরপুর, (৩) বালিয়া, (৪) আজিমাবাদ (৫) বসনধারী, (৬) বারিদহাটি, (৭) কলকাতা, (৮), (১) তয়াগড় (১০) দক্ষিণসাগর, (১১) গাড়িজুড়ি, (১২) মাসপুর, (১৩) ইখতিয়ারপুর, (১৪) মাগুরা, (১৫) মেদনমল্ল, (১৬) ময়না, (১৭) মানপুর, (১৮) মুড়াগাছা, (১৯) পেচাকুলি, (২০) পাইকান, (২১) শাহপুর, (২২), (২০) সাতল ও (২৪) উত্তর পরগনা। তখন থেকে এই অঞ্চলটির নাম হয় ২৪ পরগনা।

১৯৮৩ সালে ড. অশোক মিত্রের প্রশাসনিক সংস্কার কমিটি ২৪ পরগনা জেলাটি বিভাজনের সুপারিশ করেন। ১৯৮৬ সালের ১লা মার্চ এই জেলাটিকে উত্তর ও দক্ষিণ এই দুইভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগ দুটির নাম দেওয়া হয় উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা।  (North 24 Pargana District)

ভূ-পরিচয় 

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রায় অধিকাংশটাই পলিগঠিত সমভূমি। উত্তর থেকে দক্ষিণে ভূমি সামান্য ঢালু। জলা, বিল, বাঁওড়, মরা নদীর খাত প্রভৃতি এই জেলার মধ্যভাগ জুড়ে রয়েছে। পরিণত ব-দ্বীপের অংশ নদিয়ার সীমান্ত ঘেঁষে এই জেলা। হাবড়া-বনগাঁ রেলপথের দক্ষিণপ্রান্ত পর্যন্ত এই ব-দ্বীপের বিস্তৃতি। এরপর সুন্দরবন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে বারাসাত-বসিরহাটের পরিণত ব-দ্বীপ।

অর্থনীতি

২৪ পরগনা জেলায় ধান, পাট, তামাক, আখ ও নানারকমের শাকসবজির চাষ হয়। এই জেলায় তিন ধরনের ধানই চাষ হয়, যেমন : আমন, আউশ ও বোরো। পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে শিল্পোন্নত জেলা হল উত্তর ২৪ পরগনা। সবথেকে বেশি চালু কারখানার সংখ্যা এই জেলাতেই। ১৯৯৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫,২৬৬। পাট, কাপড়, গেছ ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি শিল্পের কারখানা রয়েছে হুগলি নদীর পূর্বপাড়ে নৈহাটি, বারাকপুর, জগদ্দল, টিটাগড়, বজবজ প্রভৃতি অঞ্চলে।

যোগাযোগ

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মধ্যে মধ্যযুগে স্থলপথ ও জলপথে যাতায়াতের ব্যবস্থা ভালোই ছিল। মানসিংহ স্থলপথে যশোরে গিয়েছিলেন প্রতাপাদিত্যকে ধর্ষন করতে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে বারাকপুর ট্রাংক রোড (বি. টি. রোড) ধরে সিরাজদ্দৌলা মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতা এসেছিলেন। সম্প্রতি কে.এম.ডি.এ. বারাকপুর- কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করেছে। কলকাতা ও ২৪ পরগনার মধ্যে যোগাযোগ সহজ করেছে কে.এম.ডি.এ-র ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস।

এক নজরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা

স্থাপনকাল : ১ মার্চ ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দ।

ভৌগোলিক অবস্থান 

উত্তর অক্ষাংশ ২৩°১৫′2” এবং ২২°১১০৬”-এর মধ্যে। বিস্তৃত এবং দ্রাঘিমাংশ ৮৯°০৫ পূর্ব থেকে ৮৮°২০´ পূর্বের মধ্যে অবস্থিত।

সীমানা : পূর্বে বাংলাদেশ, দক্ষিণে কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তরে নদিয়া এবং পশ্চিমে হুগলি নদী।

আয়তন : ৪,০৯৪ বর্গকিমি।

জেলা সদর : বারাসাত।

মহকুমার সংখ্যা : ৫টি। বসিরহাট, ব্যারাকপুর, বারাসাত সদর, বিধাননগর ও বনগাঁ।

ভূ-প্রকৃতি ও মৃত্তিকা: পলি ও দোঁআশ মাটি দ্বারা নির্মিত সমতলভূমি।

জলবায়ু: নাতিশীতোয়।

উম্বুতা : গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও শীতকালে সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

নদ-নদী: হুগলি, ইছামতি নদ, যমুনা, বিদ্যাধরী, কালিন্দী ও রায়মঙ্গল।

অভয়ারণ্য: বনগাঁও-র কাছে বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য। এটি হরিণের জন্য বিখ্যাত ।

কৃষিজ উৎপাদন : ধান ও গম উৎপাদনে এই জেলা পশ্চিমবঙ্গে অষ্টম স্থান অধিকার করে আছে। এছাড়া তৈলবীজ, পাট ও আলু চাষও হয়।  (North 24 Pargana District)

স্বাভাবিক উদ্ভিদ : আম, জাম, কাঁঠাল, নারকেল, তাল, সুপারি ইত্যাদি।

জনসংখ্যা: ১০,০৮২,৮৫২ জন। (রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১১.১৪ শতাংশ)। রাজ্যের জনসংখ্যায় সর্বোচ্চ জেলা।

পুরুষ: ৫১,৭২,১৩৮ জন।

মহিলা : ৪৯,১০,৭১৪ জন।

জনঘনত্ব : প্রতি বর্গকিমিতে ২,৪৬৩ জন।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: ১২.৮৬ শতাংশ।

লিঙ্গ অনুপাত: ৯৪৯ জন (প্রতি ১০০০ জন পুরুষে)।

সাক্ষরতার হার: মোট ৮৪.৯৫ শতাংশ (রাজ্যে তৃতীয়)। পুরুষ ৮৮.৬৬ শতাংশ এবং মহিলা ৮১.০৫ শতাংশ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বিশ্ববিদ্যালয় : ৪টি।

(১) বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মোহনপুর (স্থা. ১৯৭৪),

(২) পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যচাষ বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, মোহনপুর (স্থা. ১৯৯৫)

(৩) পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বারাসাত (স্থা. ২০০৮),  (North 24 Pargana District)

(৪) ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুডিশিয়াল সায়েন্সেস, বারাসাত (স্থা. ২০১৪)।

মোট কলেজের সংখ্যা ২৮টি। ডিগ্রি কলেজ ২৫টি, প্রযুক্তিবিদ্যা কলেজ ৩টি।

পুরসভা

মোট ২৭টি। বারাসাত (১৮৬৯), বরানগর (১৮৯২), বাদুড়িয়া (১৯২৯), বনগাঁ (১৯৫৪), অশোকনগর-কল্যাণগড় (১৯৬৮), ব্যারাকপুর (১৯১৬), গোবরডাঙা (১৮১০), বসিরহাট (১৮৬৯), দমদম (১৮৭০), ভাটপাড়া (১৮৯৯), গারুলিয়া (১৮৬৯), হাবড়া (১৯৭৯), কামারহাটি (১৮৯২), নৈহাটি (১৮৬৯), খড়দহ (১৮৬৯), কাঁচরাপাড়া (১৯১৭), নব ব্যারাকপুর (১৯৬৫), উত্তর ব্যারাকপুর (১৮৬৯), দক্ষিণ দমদম (১৮৬৯), উত্তর দমদম (১৮৭০), পানিহাটি (১৯০০), টাকি (১৮৬৯), টিটাগড় (১৮৯৫), হালিশহর (১৯০৩), বিধাননগর (১৮৮৯), মধ্যমগ্রাম (১৯৯৩) এবং রাজারহাট-গোপালপুর (১৯৯৪)।  (North 24 Pargana District)

গ্রাম পঞ্চায়েতঃ ২০০টি।

পঞ্চায়েত সমিতি: ২২টি।

ব্লক 

২২টি। আমডাঙ্গা, বাদুরিয়া, বাগদা, বারাসাত-১, বারাসাত-২, বারাকপুর-১, বারাকপুর-২, বসিরহাট-১, বসিরহাট-২, বনগাঁও, দেগঙ্গা, গাইঘাটা, হাবড়া-১, হাবড়া-২, হাড়োয়া, হাঁসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ, রাজারহাট, সন্দেশখালি-১, সন্দেশখালি-২, স্বরূপনগর।

থানা: ৪১ টি।

লোকসভা আসন: ৫টি। বনগাঁ (তপশিলি জাতি), বারাকপুর, বারাসাত, বসিরহাট, দমদম।

বিধানসভা আসন

৩৩টি। বারাসাত, বনগাঁ-উঃ (তপশিলি জাতি), বনগাঁ-দঃ (তপশিলি জাতি), বাগদা (তপশিলি জাতি), হাবড়া, গাইঘাটা (তপশিলি জাতি), দেগঙ্গা, অশোকনগর, বাদুড়িয়া, স্বরুপনগর (তপশিলি জাতি), হাড়োয়া (তপশিলি জাতি), মিনাখাঁ (তপশিলি জাতি), সন্দেশখালি (তপশিলি জাতি), বসিরহাট দঃ, বসিরহাট উঃ, হিঙ্গলগঞ্জ (তপশিলি জাতি), বীজপুর, আমডাঙ্গা, ভাটপাড়া, নৈহাটি, নোয়াপাড়া, জগদ্দল, রাজারহাট-গোপালপুর, রাজারহাট-নিউটাউন (তপশিলি জাতি), ব্যারাকপুর, পানিহাটি, খড়দহ, বরানগর, মধ্যমগ্রাম, দমদম উঃ, দমদম, বিধাননগর, কামারহাটি।  (North 24 Pargana District)

যোগাযোগ ও পরিবহণ 

মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য ১৬২.৭০ কিমি ও সড়কপথ ১,৩৪৮ কিমি (পাকা ১,৩৪৩ কিমি এবং কাঁচা ৫ কিমি)। জাতীয় সড়ক NH 34. NH-35 এই জেলার ওপর দিয়ে গেছে। উল্লেখযোগ্য রেলস্টেশন বারাকপুর, নৈহাটি, বারাসাত, মধ্যমগ্রাম ও বনগাঁ

বাণিজ্য কেন্দ্র: কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি, সোদপুর, বারাসাত, মধ্যমগ্রাম, বনগাঁ, বসিরহাট, টাকি, হাসনাবাদ ।

শিল্প: জেলার প্রধান প্রধান শিল্পগুলি হল : পাটকল, বস্ত্রশিল্প, চর্মশিল্প, সেরামিক শিল্প, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি, চশমার কাঁচ ও লেন্স তৈরি, হস্তচালিত তাঁতকল ইত্যাদি।

অর্থনীতি: প্রচুর কলকারখানা থাকার জন্য এখানকার অর্থনীতি বেশিরভাগটাই শিল্পনির্ভর।

হাসপাতালের সংখ্যা: সরকারি হাসপাতাল ১৪টি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা ১০২টি ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭৬৭টি।

আদালতের সংখ্যা: ১টি। বারাসাত।

গ্রন্থাগারের সংখ্যা: ২২১টি।

ক্রীড়াঙ্গন: বিবেকানন্দ যুবভারতী স্টেডিয়াম ও বারাসাত স্টেডিয়াম।

প্রধান উৎসব: দুর্গাপূজা, কালীপূজা, দোলযাত্রা, ঈদ, মহরম ও নববর্ষ।

থিয়েটার / মঞ্চনাট্যমঞ্চ: সুকান্ত সদন (বারাকপুর), ঐক্যতান (নৈহাটি), নীলদর্পণ (বনগাঁও, ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট এর উদ্বোধন হয়)।

প্রধান উৎসব: কাঁচরাপাড়ার ফতিমাবিবির মেলা, কদমখানির লালনের মেলা।

প্রধান আঞ্চলিক মেলা 

স্বরূপনগর

স্বরূপনগরের সীমান্তবর্তী গ্রাম ভাদুরিয়া এবং গলদা প্রতিবছর অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি দেবী দুর্গার অকাল বোধন করে। দেবী এখানে কাত্যায়নী রূপে পূজিতা। দেবী এখানে দশভূজা নন, অষ্টাদশভূজা। সঙ্গে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক এবং অসুর ও সিংহ। নেই মোষ। পুজো উপলক্ষ্যে আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম আনন্দে মেতে ওঠে। পুজো উপলক্ষ্যে মেলা, যাত্রা, বাউলগানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আয়োজন করা হয়। গ্রামের প্রবীণেরা বলেন যে আগে এখানে দুর্গাপূজাই প্রতিযোগিতার হত কিন্তু দুই গ্রামের মধ্যে বিবাদের জেরে এই পুজোর শুরু। পুজোর দিনগুলোতে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষই পরিবারের মঙ্গল কামনায় বাড়ির সামনে বাঁশ পুঁতে তার মাথায় লণ্ঠন জ্বালিয়ে রাখেন।  (North 24 Pargana District)

বনগাঁর কালীমন্দির

১৫১০ সালের কথা। বেনাপোল কাগজ পুকুরিয়ার রাজা রামচন্দ্র খাঁ ছিলেন ঘোর শাক্ত। বৈষ্ণব ধর্মের বাড়বাড়ন্ত রোধে ছিলেন খড়্গহস্ত। শাক্ত ধর্ম প্রচারের জন্য রাজা সাত ভাইকে বনগাঁর এই কালীমন্দিরে পাঠিয়েছিলেন। সাত ভাই কালিপ্রসাদ, কালিকিঙ্কর, কালিপ্রসন্ন, কালিকান্ত, কালিরাম, কালিদাস ও কালিকৃষ্ণ তন্ত্র সাধনার উদ্দেশ্যে কালীপুজা শুরু করেন। তন্ত্র সাধনার পাশাপাশি তারা মন্দিরে পুজো করে ডাকাতি করতে বেরোতেন বলেও শোনা যায়। তখন থেকেই নাম হয় সাতভাই কালীমন্দির। বনগাঁ শহরের মতিগঞ্জ থেকে চার কিমি নদীপথ পেরিয়ে তবে পৌঁছনো যায় এই মন্দিরে। সড়ক পথেও যাওয়া যায়। পুরনো কালীমূর্তিটি পেছনে বটগাছের তলায় পোঁতা। বর্তমানে মন্দিরে বিগ্রহ ছাড়াই পুজো হয়। শুধু মুকুটটি মন্দিরে রয়েছে। মন্দিরের আশেপাশে ১২ একর জমিতে পৌষ মাসে এই মেলা বসে। চলে প্রায় একমাস। প্রতি মঙ্গল ও শনিবার এই মেলা উপলক্ষ্যে হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়। বহু মানুষ মানত করেন কাঙ্ক্ষিত ফল পাবার আশায়। মেলা থেকে যা আয় হয়, তা গ্রামোন্নয়নের কাজে ব্যয় হয়।

গোবরডাঙ্গা

লোক উৎসব। ২০০৭ সাল থেকে এই উৎসবের সূচনা। উদ্যোক্তা স্থানীয় মিলন সংঘ। বঙ্গীয় লোকসংস্কৃতির সাথে অন্য রাজ্যের লোক-সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটানোর উদ্দেশ্যেই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। লোক-সংস্কৃতির প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও আলোচনা সভা হয়।

মতুয়া মেলা, ঠাকুরনগর

মতুয়া সম্প্রদায়ের পীঠস্থান এই জেলার গাইঘাটার ঠাকুরবাড়িতে প্রতি বছর মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে এই মেলা শুরু হয়। (১৮১২ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের ওরাকান্দিতে হরিচাদ ঠাকুরের জন্ম। তিনিই এই ধর্মের প্রবর্তক। ১৯৪৮ খ্রি. হরিচাঁদ ঠাকুরের নাতি প্রমথরঞ্জন এই ঠাকুরবাড়ি তৈরি করেন)। হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি। স্মরণে এই মেলা চলে সাতদিন। স্থানীয় ‘কামনা পুকুরে ভক্তরা পুন্যস্নান করেন। আর স্নানের মাধ্যমেই মেলার সূচনা। মন্দিরে পুজো-পাঠ, নাম সংকীর্তন চলে। কয়েক লক্ষ জনসমাগম হয় এই মেলায়। প্রতিবেশি রাজ্য বিহার, ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগঢ়, মহারাষ্ট্র থেকে যেমন পুণ্যার্থীরা আসেন তেমনি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান থেকেও প্রচুর। ভক্ত এই মেলায় যোগদান করেন। সকলেই ধর্মগুরু হরিচাদ ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করেন- তাদের দেশে যেন শান্তি বিরাজ করে।    (North 24 Pargana District)

বিজয়মেলা, গোপালনগর

পল্লিকবি জসিমউদ্দিন এবং লোককবি বিজয় সরকার-এর স্মরণে গোপালনগরের রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ‘লোক উৎসব ও বিজয় মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। উদ্যোক্তা লোককবি বিজয় সরকার সংস্কৃতি পরিষদ। সহযোগিতায় জসিমউদ্দিন অ্যাকাডেমি। মেলায় সাহিত্য বাসর আলোচনা সভা, বাউল, পল্লিগীতি, ভাটিয়ালিসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। লোকসংস্কৃতির প্রসার ঘটাতেই উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।

বাণীপুর

হাবরার বাণীপুরে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম রবিবার লোক উৎসবের আয়োজন করা হয়। গান্ধিজীর বুনিয়াদি শিক্ষা ও রবীন্দ্রনাথের আশ্রমিক শিক্ষার সঙ্গে লোকসমাজ ও লোকসংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটাতে ১৯৫৫ সালে এই উৎসবের সূচনা হয়। উৎসব উপলক্ষ্যে নানা প্রাদেশিক লোকশিল্পীরা প্রাদেশিক নাচ পরিবেশন করেন। এছাড়াও বিজ্ঞান প্রদর্শনী, লোক গান, পটের গান, বাউল, ভাওয়াইয়া, তৰ্জা গান, বহুরূপী, সাহিত্য বাসর, ডোমনি এবং ডাং পুতুল নাচ, রায়বেশে ও বেনে পুতুল নাচ, বাউল গান, পটের গান, বিভিন্ন রাজ্যের লোকনৃত্য, নাটক, কবির লড়াই প্রভৃতি অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন রাজ্য এবং প্রতিবেশি বাংলাদেশ থেকে অনেক শিল্পী এই উৎসবে আসেন। চার দিন ধরে চলা এই মেলায় লোকসংস্কৃতি উৎসব রাজ্যের অন্যতম বড় লোক উৎসব। এই উৎসবে সাধারণ মানুষ সারা ভারতের লোকশিল্পের পরিচয় পেয়ে যান।

কেউটিয়ায় লোককবি স্মরণে গান ও মেলা 

ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে (প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের ৭ ও ৮ তারিখ) উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ার কেউটিয়ায় লোককবি বিজয় সরকারের জন্মোৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে কবিয়ালদের দল গাইতে আসেন। কবির ভিটেতেই তাঁর সমাধি। আর তার পাশেই বসে মেলা, কবিগানের আসর সঙ্গে লোকগান। লোককবি বিজয় সরকারের স্মারক সমিতি এই মেলা ও কবিগানের আয়োজন করেন।

বসিরহাট

হাসনাবাদের কুমোরপুকুর ও তালপুকুর। মাঘ মাসের শেষ শনিবার মেলার সূচনা। চলে একমাস। মন্দিরে পুজো দেওয়া যায় আট দিন। কথিত আছে কয়েকশ বছর আগে বাছড়া মোহনপুরের মন্দির থেকে পাথরের কালিমূর্তি চুরি হয়ে যায়। হিজলা খালে মূর্তিটিকে ফেলে পালায় দুষ্কৃতিরা। আলি চৌধুরি নামে এক মুসলমান মৎস্যজীবী খালের জ্বলে মূর্তিটি পান। কথিত আছে রাতে দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়ে গ্রামের কল্যাণ কামনায় পুজো চেয়েছিলেন। আলি মুসলমান হয়েও নিজের বাড়িতে দেবী পুজোর আয়োজন করেন। তাতে রুষ্ট প্রতিবেশিরা আলিকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। কথিত আছে এরপরেই কলেরায় বহু গ্রামবাসী মারা গিয়েছিলেন। দেবীকে তুষ্ট করতে গ্রামবাসীরা ওই মৎস্যজীবীকে আবার গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু হয়। সেই থেকে এই সম্প্রদায়ের গভীর উর্দ্ধে।  (North 24 Pargana District)

টাকী 

টাকী কুলেশ্বরী কালীবাড়ির পুজো চারশ বছরেরও পুরনো। এই কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল টাকির জমিদার রাজা প্রতাপাদিত্যের আমলে। কুলেশ্বরী কালা বড়ই জাগ্রত। কার্তিকী অমাবস্যায় জাঁকজমক করে মায়ের পুজো হয়। এটি মায়ের মন্দির নয়, বাড়ি। জনশ্রুতি এখানে রাতে মা ঘুরে বেড়াতেন। কথিত আছে ইছামতী নদীর কুলে জেলেদের জালে একটি দেবী ঘট উঠে আসে। এরপর জমিদার স্বপ্নাদেশ পান নদীর কূলে পাওয়া ঘট নিয়ে দেবীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই ঘট দিয়ে পুজো শুরু হয়। পুজোর সময় পাঁঠাবলিও হয়। পরবর্তীতে মায়ের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন জমিদাররা। কালীপুজোর সময় হাজার হাজার ভক্ত দূর-দূরান্ত থেকে এখানে মূর্তি দর্শনে আসেন এবং বহু মানুষ মানত করেন কাঙ্ক্ষিত ফলের আশায়।

দর্শনীয় স্থান

নৈহাটির কাঁঠালপাড়ায় সাহিত্য সম্রাট ও বন্দেমাতরম গানের স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্রের, শ্যামনগরের মূলাজোড়ে কালীমন্দির খুবই জাগ্রত। হালিশহরে কালীসাধক রামপ্রসাদের, কাঁচরাপাড়ায় সাংবাদিক ও সাহিত্যিক ঈশ্বর গুপ্তের (১৮১২-১৮৫৯), তাঁর রচিত ‘সংবাদ প্রভাকর’ ছিল প্রাত্যহিক সংবাদপত্র), কাঁচরাপাড়ায় কৃষ্ণ দেবরায়ের প্রতিষ্ঠিত আটচালা বাংলা মন্দির বিখ্যাত। গোপালনগরে সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান। সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মরণে বনগাঁর অদূরে বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্য’ গড়ে উঠেছে। এছাড়া বেড়াচাঁপায় চন্দ্রকেতু রাজার গড় এবং সুন্দরবন অঞ্চল রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকটি স্থান ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন—ভাটপাড়া, নৈহাটি, কুমারহট্ট বা হালিসহর প্রভৃতি স্থান ন্যায়শাস্ত্র ও সংস্কৃত শিক্ষার কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত ছিল। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত ব্যারাকপুরের নাম।

জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব 

 রামপ্রসাদ সেন (আনুমানিক ১৭২০/২১-১৭৮১ খ্রি.) 

হালিশহর। খ্যাতনামা কবি, কালীসাধক ও গায়ক। শ্যামাসঙ্গীত রচয়িতা। তাঁর গান রামপ্রসাদী সঙ্গীত নামে খ্যাত।

তিতুমীর (১৭৮২-১৮৩১ খ্রি.) 

হায়দরপুর। প্রকৃত নাম মির নিশার আলি। ওয়াহাবী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। জমিদারদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হলে নারকেলবেড়িয়ায় বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন। উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের নেতৃত্বে ইংরেজ সেনাবাহিনী এই কেন্না ধ্বংস করে এবং তিতুমীর নিহত হন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিতুমীরের এই সশস্ত্র সংগ্রাম ‘বারাসাত বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত।

রাসমণি, রানি (১৭৯৩-১৮৬১ খ্রি.) 

হালিশহর। কলকাতার জানবাজার জমিদার বাড়িতে বিবাহ হয়। দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। দরিদ্র ধীবরদের গঙ্গায় মাছ ধরার অধিকার দেওয়ার জন্য বিদেশী বণিকদের স্টিমার চলাচল বন্ধ করেন।

NORTH 24 PARGANAS - West Bengal Tourism, Experience Bengal, Dept. of  Tourism, Govt. of W. B.

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (১৮১২-১৮৫৯, জন্ম ১২১৮ বঙ্গাব্দের ২৫ ফাল্গুন) 

কাঁচরাপাড়া। বাঙালি কবিয়াল রচনারীতির শেষ কবি। ব্যাঙ্গাত্মক কবিতা রচনায় বিখ্যাত হয়েছিলেন। সাপ্তাহিক ‘সংবাদ প্রভাকর’ (প্রথম প্রকাশ ১৮৩১ খ্রি. ২৮ জানুয়ারি), পাষণ্ডপীড়ন’, ‘সংবাদ রত্নাবলী’ প্রভৃতি পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা করেন।

 

Read More:- BEL Recruitment 2022 | Notification Out, Salary Rs. 55,000/- PM | B.Sc. / B.E / B.Tech can Apply

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪)

নৈহাটি, কাঁঠালপাড়া। সাহিত্যস্রষ্টা, ঔপন্যাসিক, ‘বন্দেমাতরম্’ রচয়িতা ও বাংলার ‘নবজাগরণ’ যুগের অন্যতম প্রধান পুরুষ। ভারতের জাতীয় স্তোস্ত্র তাঁরই লেখা। চাকরি ক্ষেত্রে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট। ‘ইন্ডিয়ান ফিল্ড’ পত্রিকায় প্রকাশিত ইংরেজিতে ‘রাজমোহন’স ওয়াইফ’ প্রথম উপন্যাস। ১৮৬৫ তে বাংলা ভাষায় প্রথম উপন্যাস ‘দুর্গেশনন্দিনী’ প্রকাশ। ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা সম্পাদনা। বঙ্কিমচন্দ্রের স্বাদেশিকতা ও স্বদেশপ্রেমের আদর্শ তাঁর ‘আনন্দমঠ’এ প্রকাশিত হয়। আনন্দমঠের ‘বন্দেমাতরম্’ মন্ত্র ভারতবাসীর মনে স্বদেশপ্রেমের জোয়ার আনে।

অন্যান্য গ্রন্থ: ‘দুর্গেশনন্দিনী’, ‘দেবী চৌধুরাণী, ‘সীতারাম’ প্রভৃতি পরাধীন ভারতবাসীর মনে দেশাত্মবোধ সঞ্চারে সহায়ক হয়েছিল।  (North 24 Pargana District)

অমৃতলাল বসু, রসরাজ (১৮৫৩-১৯২৯)

বসিরহাট (দণ্ডিরহাট)। বাংলার রঙ্গালয়ে প্রথম যুগে প্রখ্যাত নাট্যকার, কৌতুকরসের স্রষ্ট ও অভিনেতা। প্রথম ‘নীলদর্পণ’ নাটকে অভিনয় (১৮৭২)। ‘বিবাহ বিভ্রাট’, ‘ব্যাপিকা বিদায়’ প্রভৃতি নাটক রচনা করেন। অভিনয়ের জন্য জেলে যান। ইংরেজ সরকার এরপর নাট্য নিয়ন্ত্রণ আইন (১৮৭৬) প্রণয়ন করে। * অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯২০-২০০৩) : নকফুল, বনগাঁ। বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক, গবেষক। নয় খণ্ডে ‘বাংলা সাহিত্যের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত’ তাঁর অন্যতম সেরা কীর্তি। বাংলা আকাদেমির সভাপতি ছিলেন।

শক্তি চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৩-১৯৯৫)

বহড়ু। প্রখ্যাত কবি। ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার অন্যতম প্রধান প্রতিভা। প্রথম রচনা গদ্য, ‘নিরুপমের দুঃখ’ গল্প। উপন্যাস : দাঁড়াবার জায়গা’ ও ‘অবনী বাড়ি আছো?’।  (North 24 Pargana District)

কাব্যগ্রন্থ: ‘সোনার মাছি খুন করেছি’, ‘হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান’, ‘ধর্মে আছি জিরাফেও আছি’।

নীলরতন সরকার, স্যর (১৯৬১-১৯৪৩)

নেতরা। প্রখ্যাত চিকিৎসক। বেলগাছিয়া মেডিকেল কলেজ (বর্তমান আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল), যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, যাদবপুর যক্ষ্মা হাসপাতাল (বর্তমান নাম কুমুদশঙ্কর রায় যক্ষ্মা হাসপাতাল) প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান গঠনে তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

যোগীন্দ্রনাথ সরকার (১৮৬৬-১৯৩৭, ১২৭৩-১৩৪৪ বঙ্গাব্দ)

নেতরা। প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক। তাঁর ‘হাসি ও খেলা’ (১৮৯১) বাংলায় শিশুদের জন্য রচিত সর্বপ্রথম বই। ‘হাসি-খুশি’ (১৮৯৭), ‘খুখুমনির ছড়া” (১৮৯৯), ‘ছড়া ও ছবি, ‘শিশু চয়নিকা” প্রভৃতি গ্রন্থের রচয়িতা।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৪-১৯৫০) : গোপালনগর। প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তাঁর রচনায় পল্লী প্রকৃতি ও অরণ্য প্রকৃতি পরিস্ফুট হয়। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ—কিশোরদের জন্য ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘বনে পাহাড়ে, অন্যান্য উপন্যাস—’আরণ্যক’, ‘পথের পাঁচালী’ ‘ইছামতী’ ইত্যাদি।

শিবনাথ শাস্ত্রী (১৮৪৭-১৯১৯)

চাঙরিপোতা, সুভাষগ্রাম। ধর্মীয় ও সমাজ সংস্কারক। শিক্ষাবিদ, বহু সমাজ সংস্কারমূলক কাজে যুক্ত ছিলেন এই শিক্ষাব্রতী মানুষটি। যুগান্তর পত্রিকার নামকরণ তাঁর ‘যুগান্তর’ নামে সামাজিক উপন্যাস থেকে হয় বলে কথিত। ‘গ্রন্থ নির্বাসিতের বিলাপ’, ‘নয়নতারা’, ‘রামমোহন রায়’, ‘রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গ সমাজ’, ‘আত্মচরিত’, ‘হিমাদ্রিকুসুম’ (কাব্য) ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকীর্তি। ১৮৭৮ সালে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ গঠন করেন।

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮২-১৯২২) 

নিমতা। পৈত্রিক বাড়ি ছিল চুপি, পূর্ব বর্ধমান। রবীন্দ্রযুগের খ্যাতনামা কবি। ‘ছন্দের যাদুকর’ নামে খ্যাত। কাব্যগ্রন্থ – ‘সবিতা’, ‘কুহু ও কেকা’, ‘বেণু ও বীণা’, ‘তীর্থরেণু’, ‘অভ্র-আবীর’, ‘তুলির লিখন’, ‘হসন্তিকা’। উপন্যাস —‘জন্মদুঃখী’, ‘বারোয়ারি’ ইত্যাদি।  (North 24 Pargana District)

এছাড়াও জেলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বরা হলেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী (সাহিত্যিক), কেশবচন্দ্র সেন (গণিতবিদ), ব্যারিস্টার পি মিত্র, গায়ক শ্যামল মিত্র, সমরেশ বসু (সাহিত্যিক, নৈহাটি), সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (স্বাধীনতা সংগ্রামী), দিনেশ চন্দ্র মজুমদার (বিপ্লবী), মাসুদুর রহমান বৈদ্য (সাঁতারু) প্রমুখ।

বর্তমান রাজ্য সরকারের মন্ত্রী অমিত মিত্র (অর্থ ও আবগারি, শিল্প ও বাণিজ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, তথ্য প্রযুক্তি), জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ), সুজিত বসু (দমকল অগ্নি, গৃহ ও পরিবেশ), পূর্ণেন্দু বসু (কারিগরি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বিকাশ), ব্রাত্য বসু (বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং বায়োটেকনোলজি), তাপস রায় (পরিষদীয় দপ্তর, পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান প্রতিমন্ত্রী) এই জেলার বাসিন্দা।

এক নজরে জেলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী 

২৪ পরগনা উত্তর ও দক্ষিণ দুইভাগে বিভক্ত হয় – ১ মার্চ ১৯৮৬।

হালিশহরের প্রাচীন নাম – কুমারহট্ট ।

বাংলা ভাষার পর জেলার দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা – হিন্দি।

 ‘জুবিলি ব্রিজ’ 

উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি ও হুগলির ব্যান্ডেলের মধ্যে হুগলি নদীর উপর রেল ব্রিজ। এটির নির্মাণকার্য শুরু হয় ১৮৮২ সালে এবং নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় ১৮৮৭ সালে। মহারানি ভিক্টোরিয়ার রাজত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এই সেতুর নামকরণ হয়েছিল ‘জুবিলি ব্রিজ’। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় এবং আর একটি নতুন ব্রিজ এর পাশে তৈরি হয়েছে। ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হুগলি নদীর ওপর নৈহাটি ও ব্যান্ডেলের মাঝে জুবিলি ব্রিজের পাশে একটি নতুন রেলসেতুর উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজেন গোহাঁই। সেতুটির নামকরণ করা হয় ‘সম্প্রীতি সেতু’। এটি ৪১৫ মিটার লম্বা দেশের প্রথম স্টিল কন্টিনিউয়াস ওপেন ওয়েব গার্ডার ব্রিজ।

রেলের ওয়ার্কশপ: কাঁচরাপাড়ায় (স্থাপিত ১৮৬৩ খ্রি.)। রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউট ব্যারাকপুরে অবস্থিত।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গোপনীয় ছাপার কাজ হয় – বেলঘড়িয়ার সরস্বতী প্রেসে।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের বেনাপোলে যাওয়া যায়।

Read More:- DSSSB Recruitment 2022 Out | Released Notifications | 500+ Vacancies Apply Online, Salary, Eligibility

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles