Hooghly District Details Description | Know Your District Completely | Daily GK Update For Competitive Exams

Hooghly District

Hooghly District Details Description | Know Your District Completely | Daily GK Update For Competitive Exams: “This district with its Headquarters located at Chinsurah town is within the Burdwan Division of the State of West Bengal. So far as history goes, the name “Hooghly” is derived probably from the ‘HOGLA’, a tall reed, which grows in abundance on the riverbanks and in the marshy low lands below them. At the dawn of history, this part of the country was probably included in the territory held by the Suhmas, a tribe mentioned in juxtaposition with the Angas, Vangas, and Pundras in the Mahabharata and also in the Mahabhashya, a grammar dating back to the second century B.C.”

Hooghly District Details Description: হুগলি জেলার ইতিহাস

HOOGHLY

ইংরেজরা হুগলি জেলা পত্তন করে ১৭৯৫ সালে।

  • এই জেলা তৈরি হয় বর্ধমানের দক্ষিণাংশ ভেঙে। হাওড়া তখনও এই জেলার মধ্যেই ছিল। স্বতন্ত্র হাওড়া জেলা গঠিত হয়।
  • এই জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে ১৮৪৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। চন্দ্রকোণা ও ঘাটাল থানা মেদিনীপুরের সঙ্গে যুক্ত হয় ১৮৭২ সালের ১৭ জুন।

প্রাচীনকালে হুগলি জেলা ছিল দক্ষিণ রাঢ়ের অংশ। নদী, খাল, বিল অধ্যুষিত এই অঞ্চল ছিল কৈবর্ত ও বাগদিদের আবাসস্থল।

  • রামায়ণ, মহাভারত, মনুসংহিতা এবং পএম অশোকস্তম্ভ লিপিতে এই স্থানের উল্লেখ রয়েছে। এই অঞ্চলের অধিবাসীদের প্রধান জীবিকা ছিল মৎস্য শিকার।

এই জেলাতে প্রথম (বাংলা অক্ষর সমন্বিত) মুদ্রণ যন্ত্র স্থাপিত হয় ১৭৭৮ সালে।

  • এই বছরই প্রথম বাংলা বই (হ্যালহেডের ‘এ গ্রামার অফ দ্য বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ’) ছাপা হয় এই জেলাতেই।
  • ১৮১৮ সালে জন ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনায় পশ্চিমবঙ্গে তথা ভারতের প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক সংবাদপত্র ‘সমাচার দর্পণ’ শ্রীরামপুরের ব্যাপটিস্ট মিশন সোসাইটি দ্বারা প্রকাশিত হয়।

জেলার নামকরণ বিদেশিকৃত নয় এটা বোঝা যায় ১৪৯৫ সালে রচিত বিপ্রদাস পিপলাইয়ের ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যে হুগলি নামের উল্লেখ থেকে।  (Hooghly District Details Description)

  • কারণ এই রচনাকালের ২২ বছর পর পর্তুগিজরা প্রথম বাংলায় প্রবেশ করে।
  • ১৫৯৬ সালে রচিত আবুল ফজলের ‘ডাইন-ই-আকবরী’ গ্রন্থেও হুগলি নামের উল্লেখ আছে।

স্থাপনকাল: বর্ধমানের দক্ষিণাংশকে বিচ্ছিন্ন করে ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা প্রশাসনিক প্রয়োজনে হুগলি জেলা ভাগ করেছিল।

ভৌগোলিক অবস্থান 

উত্তর অক্ষাংশ ২৩°০১ ২০ এবং ২২৩৯ ৩২”-এর মধ্যে বিস্তৃত এবং দ্রাঘিমাংশ ৮৮৩০-১৫” পূর্ব থেকে ৮৭°৩০ ২০. পূর্বের মধ্যে অবস্থিত।

সীমানা: উত্তরে বর্ধমান, পূর্বে হুগলি নদী ও উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমে বাঁকুড়া এবং দক্ষিণে হাওড়া ও মেদিনীপুর।

আয়তন: ৩,১৪৯ বর্গকিমি।

জেলা সদর: চুঁচুড়া।

মহকুমার সংখ্যা : ৪টি। চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, আরামবাগ।

ভূ-প্রকৃতি ও মৃত্তিকা

জেলার উত্তর-পশ্চিম কোণে গোঘাট থানার অন্তর্গত কিছু অংশ ছাড়া সমগ্র জেলাটি পলি সমভূমি দ্বারা গঠিত। এটি প্রায় অরণ্যবিহীন জেলা। দ্বারকেশ্বর 1 নদী গো-ঘাট এবং আরামবাগ থানার বিভাজিকা হিসাবে বিদ্যমান ।

জলবায়ু: নাতিশীতোষ। উষ্ণতা সর্বোচ্চ ৪৩° সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ১০° সেলসিয়াস।

নদ-নদী ও হুগলি, দ্বারকেশ্বর, দামোদর। এছাড়া রয়েছে বেহুলা, সরস্বতী, কুরী, মুণ্ডেশ্বরী, কানা দামোদর।

কৃষিজ উৎপাদন

জেলায় সবচেয়ে বেশি চাষ হয় আমন ধানের। তারকেশ্বরে সবচেয়ে বেশি আলু উৎপন্ন হয়।

  • দুধ উৎপাদনে তৃতীয়, ধান উৎপাদনে দ্বাদশ, ডিম উৎপাদনে সপ্তম স্থান অধিকার করে আছে এই জেলা।
  • এছাড়া আলু, পাট, তৈলবীজ, ডাল,  কুমড়ো প্রভৃতির চাষও হয়।

স্বাভাবিক উদ্ভিদ: আম, জাম, কাঠাল, তাল, নারকেল, সুপারি, সেগুন, শাল ইত্যাদি।

জনসংখ্যা: ৫৫,২০,৩৮৯ জন। (রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৬.২৯ শতাংশ)।

পুরুষ: ২৮, ১৯,১০০ জন।

মহিলা: ২৭,০১,২৮৯ জন।

জনঘনত্ব: প্রতি বর্গ কিমিতে ১,৭৫৩ জন।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: ৯.৪৯ শতাংশ।

লিঙ্গ অনুপাত: ৯৫৮ জন (প্রতি ১০০০ জন পুরুষে)।  (Hooghly District Details Description)

সাক্ষরতার হার: মোট ৮২.৫৫ শতাংশ। পুরুষ ৮৭.৯৩ শতাংশ এবং মহিলা ৭৬.১৫ শতাংশ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

বিশ্ববিদ্যালয় ২টি। শ্রীরামপুরে সেনেট অফ শ্রীরামপুর কলেজ (বিশ্ববিদ্যালয়)। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে চালু হল রানি রাসমণি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়।

  • সিঙ্গুর সরকারি জেনারেল ডিগ্রি কলেজের ক্যাম্পাসে এর কাজ শুরু হবে। এর প্রথম উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছেন আশুতোষ ঘোষ।
  • এছাড়া জেলায় মোট কলেজের সংখ্যা ১১টি। ডিগ্রি কলেজ ১০টি, প্রযুক্তিবিদ্যা কলেজ ১টি।

পুরসভা (প্রতিষ্ঠা বছর) 

১১টি। বাঁশবেড়িয়া (১৮৬১), ভদ্রেশ্বর (১৮৬৯), বৈদ্যবাট (১৮৬৯), শ্রীরামপুর (১৮৪২), আরামবাগ (১৮৮৬), চাঁপদানি (১৯১৬),

  • বিষয়া (১৯৪৪), চুঁচুড়া (১৮৬৫), কোন্নগর (১৯৪৪), উত্তরপাড়া-কোতরং (১৯৬৪), তারকেশ্বর (১৯৭৫)।

পৌরনিগম: ১টি। চন্দননগর (স্থাপিত ১৯৫৫ খ্রি.)।

গ্রাম পঞ্চায়েত: ২১০টি।

পঞ্চায়েত সমিতি: ১৮টি।

ব্লক

১৮টি। আরামবাগ, বলাগড়, চন্ডীতলা-১, চন্ডীতলা-২, চুঁচুড়া মগরা, ধনিয়াখালি, গোঘাট-১, গোঘাট-২, হরিপাল, জাঙ্গিপাড়া,

  • খানাকুল-১, খানাকুল-২, পান্ডুয়া, পোলবা দাদপুর, পুরসুরা, শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া, সিঙ্গুর, তারকেশ্বর।

থানা : ২৪টি। চুঁচুড়ায় রাজ্যের দ্বিতীয় মহিলা থানা অবস্থিত।

লোকসভা আসন 

৩টি। হুগলি, আরামবাগ (তপশিলি জাতি), শ্রীরামপুর।

বিধানসভা আসন 

১৮টি। চণ্ডীতলা, জঙ্গিপাড়া, শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, চন্দননগর, চাপদানি, সিঙ্গুর, চুঁচুড়া, হরিপাল, তারকেশ্বর, পুরশুড়া,

  • আরামবাগ (তপশিলি জাতি), ধনিয়াখালি (তপশিলি জাতি), খানাকুল, গোঘাট (তপশিলি জাতি), বলাগড় (তপশিলি জাতি), পান্ডুয়া, সপ্তগ্রাম।

যোগাযোগ ও পরিবহণ 

জেলার পূর্বাংশে শহর এলাকার ধার দিয়ে দিল্লি রোড ৬৯ কিমি গেছে।

  • এছাড়াও জি. টি. রোড-ও এই জেলার মধ্য দিয়ে গেছে।
  • জাতীয় সড়ক NH-2 এই জেলার ওপর দিয়ে গেছে। হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইন, হাওড়া-বর্ধমান মেনলাইন, হাওড়া-তারকেশ্বর;  (Hooghly District Details Description)
  • শিয়ালদহ-ডানকুনি এই জেলার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।
  • এই জেলার উল্লেখযোগ্য রেল স্টেশনগুলি হল শ্রীরামপুর, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেল, বৈদ্যবাটী, হুগলি ইত্যাদি।

বাণিজ্য কেন্দ্র : চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, ব্যান্ডেল, আরামবাগ প্রভৃতি।

শিল্প 

এই জেলা শিল্পে উন্নত হলেও জেলার ৫০ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল।

  • সমগ্র আরামবাগ মহকুমা, পান্ডুয়া (হুগলি মহকুমা), জাঙ্গিপাড়া, (শ্রীরামপুর মহকুমা), ধনিয়াখালি (হুগলি মহকুমা), পোলবা (হুগলি মহকুমা) ইত্যাদি ব্লকগুলিতে ধান প্রধান কৃষিপণ্য।
  • আলু, পাট, তৈলবীজ প্রভৃতি চাষ হয় তারকেশ্বর (চন্দননগর মহকুমা), পুরশুড়া (আরামবাগ মহকুমা), বলাগড় (হুগলি মহকুমা) ইত্যাদি ব্লকগুলিতে।
  • আরামবাগ মহকুমার মানিকপট, রায়পুর ও শেখপুর পিতলের ঘড়া তৈরি শিল্পের পীঠস্থান। বলাগড়ের শ্রীপুর রাজবংশীপাড়ার নৌকা শিল্প বিখ্যাত ।
  • এই জেলায় প্রথম চটকল গড়ে ওঠে ১৮৫৩ সালে, রিষড়ায় (শ্রীরামপুর মহকুমা) । এখন প্রায় ১০টি চটকল আছে এই জেলায়।
  • ৪টি সুতাকল রয়েছে শ্রীরামপুরে (ন্যাশনাল টেক্সটাইল কর্পোরেশন অধিগৃহীত)।
  • এই জেলায় একসময় অবস্থিত ছিল এশিয়ার বৃহত্তম কারখানা ‘হিন্দুস্তান মোটরস’ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প।
  • বর্তমানে এটি বন্ধ। ব্যান্ডেলের কাছে মগরায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।

অর্থনীতি : মিশ্র প্রকৃতির।

হাসপাতালের সংখ্যা: সরকারি হাসপাতাল ৫টি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা ৬৯২টি।

গ্রন্থাগারের সংখ্যা : ১৫৮টি।

থিয়েটার হল : রবীন্দ্রভবন (চুঁচুড়া)।

প্রধান উৎসব : শিবরাত্রি ও গাজন (তারকেশ্বর), বড়দিন (ব্যান্ডেল চার্চ), মহর (হুগলির ইমামবাড়া), রথযাত্রা (শ্রীরামপুরের মাহেশ), চন্দনগরের জগদ্ধাত্রী, বাঁশবেড়িয়ায় কার্তিক পুজো।

প্রধান আঞ্চলিক মেলা : তারকেশ্বরের শ্রাবণী মেলা (শ্রাবণ মাস জুড়ে তারকেশ্বরের পুজো ও শিবলিঙ্গে জল ঢালার জন্য লক্ষ লক্ষ পূর্ণাথা দূর-দূরান্ত থেকে আসে),

  • শ্রীরামপুরের ঐতিহ্যপূর্ণ মাহেশের রথের মেলা (পুরীর পরেই ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীন রথযাত্রা) পান্ডুয়ার মাঘমেলা ইত্যাদি। অন্যান্য আঞ্চলিক মেলাগুলি হল

ধনেখালি

ধনেখালির শাহবাজারে জানুয়ারির মাঝামাঝি ‘হিন্দু-মুসলমানের মিলনমেলা। অনুষ্ঠিত হয় যা পীরের মেলা নামেই পরিচিত। মেলা চলে ১০ দিন। হজরত সৈয়দ গোলাম আলি শাহ কেরমানির সমাধি চত্বরে এই মেলায় প্রচুর লোকসমাগম ঘটে। মনস্কামনা পূরণের জন্য মাজারের পাশের পুকুরে সিন্নি ভাসান হয়।

দিঘির মেলা, আরামবাগ 

আমবারুণী উপলক্ষ্যে আরামবাগের ডিবিয়রা গ্রামের দিদির মেলা এই অঞ্চলের প্রাচীনতম মেলা।

  • মেলার সঠিক বয়স জানা যায় না। গড়বাড়ির রাজা রণজিৎ রায়ের খনন করা দিঘির পাড়ে এই মেলা বসে।
  • কথিক আছে রাজার বালিকা কন্যা আমবারুণীর দিনে দিঘির জলে অন্তর্ধান করে।
  • অন্তর্ধান করার আগে এক শাঁখারির কাছে শাঁখা পরে। পরে শাঁখারি রাজার কাছে শাঁখার দাম চান। রাজা দিঘির পাড়ে এসে মেয়েকে ডাকেন।
  • তখন শাঁখা পরা দুটি হাত নাকি জলের ওপর ভেসে উঠতে দেখা যায়। ওই হাত দেখতে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। সেই দিন থেকেই ওখানে মেলা চালু হয়ে যায়।
  • মেলার প্রধান বৈশিষ্ট্য পাকা কাঁচকলার বিক্রি। আর শাঁখা-সিঁদুরের ব্যবসা। রাজকন্যার শাঁখা পরার গল্পই এই মেলাটিকে টিকিয়ে রেখেছে।  (Hooghly District Details Description)

খানাকুল 

  • আমবারুণীর স্নান, চৈত্রমাসের মধুকৃষ্ণ একাদশীতে। গাছের আম রূপনারায়ণ নদীতে ভাসিয়ে গঙ্গাদেবীর মন্দিরে পুজো দেওয়া হয় ।

ইনছুড়া 

শ্রাবণ সংক্রান্তির দিন নাগ পঞ্চমীর এই মেলা শুরু হয়। চলে পাঁচদিন। মা মনসার এই মেলায় প্রচুর বঙ্গ মানুষের সমাগম হয়।

আরামবাগ

ঘোষপুর পঞ্চায়েতের পিলখা গ্রামে শীতলার গাজন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। স্বপ্নে পাওয়া দেবীর আদেশ অনুসারে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

  • প্রায় ৭০ বছরের পুরনো এই উৎসব। জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তির এক সপ্তাহ আগে থেকে ভক্তদের গলায় ‘উত্তরীয়’ দন থেকে উৎসবের সূচনা হয়।
  • জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তির দিন গাজনের অন্য শারিরীক কষ্ট (যেমন- জিভ ফোঁড়া, আগুনের কুণ্ডে হেট মুণ্ড উৰ্দ্ধপদ হয়ে ঝোলা, হাতে ধারালো কঞ্চি ফোটানো সবই হয়।
  • যদিও অকালের গাজন (গাজন সাধারণত চৈত্র সংক্রান্তিতে হয়) কিন্তু উৎসবের কোন ত্রুটিই উদ্দ্যোক্তারা রাখেন না।
  • সমস্ত উৎসবই নিয়ন্ত্রিত হয় পিলখা গ্রামের অস্ত্যজ মানুষের দ্বারা।
  • উৎসবে অবশ্য উচ্চবর্ণের মানুষেরাও আসেন। এই উৎসবকে ‘মনগাজন ও বলে।

দর্শনীয় স্থান

ডোরিক স্থাপত্যে গড়া পর্তুগিজদের দ্বারা নির্মিত ১৫৯৯ সালের ব্যান্ডেলের গির্জা, শ্রীরামপুরে ড্যানিশ গেট,

  • একসময় ওলন্দাজ উপনিবেশ চুঁচুড়ায় ১৬৭৮ সালে তৈরি আটকোণা গির্জা ও আর্মানি গির্জা অন্যতম দ্রষ্টব্যস্থান (ব্যান্ডেল গর্চের পর রাজ্যের দ্বিতীয় প্রাচীনতম চার্চ)।
  • দানবীর হাজি মহম্মদ মহসিনের তৈরি হুগলির ইমামবাড়া (স্থাপিত-১৮৬১) ও চুঁচুড়ার মহসীন কলেজ, ঠাকুর শ্রীরামকৃয়দেবের জন্মস্থান কামারপুকুর, রাজা রামমোহন রায়ের জন্মস্থান ও পৈতৃক বাড়ি রাধানগর, প্যারীচাঁদ মিত্র,
  • ‘চন্ডী’ প্রণেতা মাধবাচার্যর জন্মস্থান, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মস্থান দেবানন্দপুর, চন্দননগরের ডুপ্লেক্স কলেজ (এখানেই পড়াশোনা করেছেন আজাদ হিন্দ বাহিনীর সংগঠক রাসবিহারী বসু),
  • খানাকুলের হানুয়াতে শিব-দুর্গা মন্দির, এর শৈল্পিক কারুকার্য অসাধারণ।
  • হাজি মহম্মদ মহসিনের জন্মস্থান হুগলি, কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান রাজবলহাট, আশাপূর্ণা দেবীর জন্মস্থান বেগমপুর,  (Hooghly District Details Description)
  • তারকেশ্বরের শিব মন্দির (আটচালা মন্দিরে সয়ম্ভূ শিবলিঙ্গ, ১৭২৯ সালে রাজা ভারামালা এটি নির্মাণ করেন)
  • চন্দননগরের ফরাসিদের কুঠি (স্বাধীনতার পরও তিন বছর চন্দননগর ভারতের অধীনে ছিল না, ১৯৫১ সালে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়),
  • বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরীর মন্দির (সমগ্র ভারতে সম্পূর্ণভাবে তান্ত্রিক একটি মাত্র মন্দিরের অস্তিত্ব আছে। এটি বাঁশবেড়িয়ায় হংসেশ্বরী মন্দির।
  • ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে রাজা নৃসিংহদেব এই মন্দির নির্মাণ শুরু করেন এবং ১৮১৪ সালে মন্দির নির্মাণ সমাপ্ত করেন রানি শংকরী দেবী),
  • রাজা রামেশ্বর দত্ত নির্মিত টেরাকোটার অনন্তবাসুদেবের মন্দির (নির্মিত ১৬৭৯ সালে),
  • আঁটপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দির (নির্মিত ১৭০৮ সালে) ইত্যাদি পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন এই জেলায় রয়েছে। পান্ডুয়ায় ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ‘আদিনা মসজিদ’ অবস্থিত।
  • ‘আদিনা মসজিদ’ নির্মাণ করেন ইলিয়াস শাহী বংশের দ্বিতীয় সুলতান সিকান্দার শাহ। ১৩৭৩ খ্রি. নির্মিত হয়। নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল ১০ বছর।
  • ১৯৩২ সালে সাঁওতালরা জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে পাণ্ডুয়ার আদিনা মসজিদকে দূর্গ হিসাবে ব্যবহার করে।
  • ত্রিবেণীর জাফর খান গাজী মসজিদ, রাজহাটের লাহিড়ী বাবার আশ্রম, খন্যানের ঐতিহাসিক ইটাচুনা রাজবাড়ি,
  • ভদ্রেশ্বরে নবরত্ন শৈল্পিক রীতিতে নির্মিত অন্নপূর্ণা মন্দির, সোমরা বাজারে স্থাপিত আনন্দময়ী মন্দির (এর অনুকরণে রানি রাসমণি দক্ষিণেশ্বরে ভবতারিনীর মন্দির নির্মাণ করেন),
  • শ্রীরামপুরে রাধাবল্লভ জিউর মন্দির।

1.বৌদ্ধবিহার

হুগলির দেউলপাড়ার বুদ্ধ মন্দির। ১৯৮৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এর উদ্বোধন করেন ১৪-তম দলাই লামা।

  • ২০০৩ সালে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক এই মন্দিরকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। বৌদ্ধ মন্দিরের মহৎ উদ্যোগ এলাকার মানুষের মনে বুদ্ধের ভাবাদর্শ জাগাবে।

মহম্মদ মহাসীন, হাজী (১৭৩২-১৮১২)

চুঁচুড়া। শিক্ষাবিদ, আরবি ও ফারসি ভাষায়। দখল ও কোরানে ব্যুৎপত্তি ছিল।

  • মুসলমানদের শিক্ষার জন্য বহু অর্থ দান করেন।
  • হুগলির ইমামবাড়া, হুগলি মহসীন কলেজ, মাদ্রাসা, মহাসীন বৃত্তি তাঁর অর্থ সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ১৭৭৬-৭৭ সালে বাংলার দুর্ভিক্ষে তিনি প্রচুর অর্থ দান করেন।

গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য (??-১৮৩১) 

বাহার, শ্রীরামপুর। বাংলা সংবাদপত্রের জনক গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য কালনা মহকুমার পাটুলির বহরা গ্রামে স্থাপন করেছিলেন তাঁর ছাপাখানা।

  • তিনিই প্রথম বাংলা সচিত্র বই মুদ্রণ করেন। ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ সচি গ্রন্থ তিনি প্রথম কলকাতায় প্রকাশ করেন ১৮১৬ সালে।
  • ১৮১৮ সালের ১৫ ই মে শুক্রবার বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র সাপ্তাহিক ‘বঙ্গাল গেজেট প্রকাশ করেন।  (Hooghly District Details Description)
  • এছাড়াও তিনি গঙ্গাভক্তিতরঙ্গিনী, লক্ষ্মীচরিত, চাণক্য শ্লোক, বেতাল পঞ্চবিংশতি ইত্যাদি বই প্রকাশ করেন।

রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩)

রাধানগর। সমাজ সংস্কারক। সর্বজনীন ধর্ম আবিষ্কারের প্রচেষ্টায় ‘আত্মীয় সভা’ (১৮১৫) প্রতিষ্ঠা করেন।

  • মূর্তি পূজা, কঠোর বর্ণভেদ প্রথা এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের আতিশয্যের নিন্দা করেন। তাঁর দীক্ষাগুর ছিলেন হরিহরানন্দ নাথ তীর্থস্বামী।

তিনটি পত্রিকা প্রকাশ করেন – ইংরেজি-বাংলায়:

দ্বিভাষিক ‘ব্রাহ্মণীকাল ম্যাগাজিন’, ‘ব্রাহ্মণ সেবাধি’ (১৮২১), বাংলায় ‘সম্বাদ কৌমুদী’ (১৮২১) ও ফারসিতে ‘মীরাৎ-উল-আখবার’ (১৮২২)।

  • জীবনের শেষভাগে ‘ব্রাহ্মসভা’ (১৮২৮) প্রতিষ্ঠা করেন।
  • ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের ২০ আগস্ট দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্রাহ্মসমাজ’-এর।
  • রামমোহন ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ‘সতীদাহ’ প্রথার বিরুদ্ধে জনমত গঠনে উদ্যোগী হন।
  • সতীদাহ প্রসঙ্গে তাঁর লেখা বইটির নাম ‘প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ’।
  • লর্ড বেন্টিঙ্ক ৪ ডিসেম্বর, ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে সপ্তদশ বিধি অনুসারে সতীদাহ প্রথা আইনত নিষিদ্ধ করেন। তিনি ডেভিড হেয়ারের সহায়তায় বহু স্কুল স্থাপন করেন।
  • ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজা রামমোহন রায় ইংলন্ডের ব্রিস্টলের কাছে স্টেপলটনে প্রয়াত হন।  (Hooghly District Details Description)
  • তাঁকে সমাধিস্থ করা হয় আর্নোস ভেল সমাধিক্ষেত্রে।

রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮২৭-১৮৮৭) 

বাকুলিয়া। প্রখ্যাত কবি। উল্লেখযোগ্য। কাব্যগ্রন্থ ‘পদ্মিনী উপাখ্যান’ (১৮৫৮), ‘কর্মদেবী’ এবং ‘শুরসুন্দরী’ (১৮৬৮)।

রামকৃষ্ণ পহমহংসদেব (১৮৩৬-১৮৮৬)

কামারপুকুর, হুগলি। শ্রীরামকৃষ্ণের বাল্যকালের নাম ছিল গদাধর।

  • পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়, মা চন্দ্রমণি দেবী।
  • গদাধর পাঠশালার ধরাবাঁধা লেখাপড়া শেখার ব্যাপারে কিছুমাত্র আকর্ষণবোধ করতেন না।
  • বাল্যকালেই তাঁর মধ্যে ধর্মভাব দেখা দেয়।

কলকাতার জানবাজারের জমিদার রাজচন্দ্র দাসের বিধবা পত্নী রাসমণি দক্ষিণেশ্বরে এক বিরাট কালী মন্দির, দ্বাদশ শিব মন্দির ও রাধাগোবিন্দের মন্দির স্থাপন করেন (৩১ মে, ১৮৫৫ সাল)।

  • শ্রীরামকৃষ্ণের দাদা রামকুমার চট্টোপাধ্যায় সেই মন্দিরের পূজারী নিযুক্ত হন। ১৮৫৫ সালে শ্রীরামকৃষ্ণ কালী মন্দিরের বেশকারী নিযুক্ত হন। (Hooghly District Details Description)
  • এই ঘটনার কিছুদিন পরে তিনি রাধাগোবিন্দের পূজক পদ গ্রহণ করেন।
  • সেই সময় রামকুমার ছোটভাই। শ্রীরামকৃষ্ণকে কালীপূজার প্রথা ও পদ্ধতি শিখিয়ে দেন।
  • ১৮৫৬ সালে রামকুমারের মৃত্যুর পর আরামকৃষ্ণ মন্দিরের কালীপূজার ভার গ্রহণ করেন।

এই সময় থেকেই শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনে এক পরিবর্তন ঘটে যায়। তাঁর মধ্যে দেখা দিতে থাকে দেবোন্মত্তভাব এবং ঘটতে থাকে অলৌকিক দর্শন।

  • ১৮৫৯ সালের মে মাসে শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে বাঁকুড়া জেলার জয়রামবাটি গ্রামের রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও শ্যামাসুন্দরী দেবীর প্রথম সন্তান সারদার শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয়।

১৮৬০ সালে শ্রীরামকৃষ্ণ ফিরে এলেন দক্ষিণেশ্বর। সারদামণি রয়ে গেলেন দেশে।

  • ১৮৬১ সালে ভৈরবী ব্রাহ্মণী যোগেশ্বরীর কাছে শ্রীরামকৃষ্ণের তন্ত্রসাধনা শুরু হয়।
  • ১৮৬৩ সালে জটাধারী দক্ষিণেশ্বরে এলে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর কাছে রামমন্ত্রে দীক্ষাগ্রহণ করেন।
  • এই বছরই তিনি আদি ব্রাহ্ম সমাজে যান এবং কেশবচন্দ্র সেনের সঙ্গে দেখা করেন।

১৮৬৫ সালের জানুয়ারি মাসে বৈদান্তিক সন্ন্যাসী তোতাপুরীর কাছে শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত সাধনা করেন। রামকৃষ্ণ পরমহংস নাম তিনিই দেন।

  • ‘দশনামী’ সম্প্রদায়ের ‘পুরী’ সন্ন্যাসীর কাছে শ্রীরামকৃষ্ণ সন্ন্যাস গ্রহণ করে নিজেকে পুরী সম্প্রদায়ভুক্ত করেন।
  • ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি মর্ত্যলীলার অন্তিমদশায় ঠাকুর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কল্পতরু হয়েছিলেন।
  • ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি সেই ঘটনার ১২৫-তম বর্ষপূর্তি পালিত হয়।

১৮৬৬ সালে ২২ জানুয়ারি শ্রীরামকৃষ্ণ আদি ব্রাত্ম সমাজের আচার্য মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের সঙ্গে দেখা করেন।

  • এই বছরই তিনি সূফী গোবিন্দের কাছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং একজন মুসলমান হিসেবে গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে ইসলাম ধর্মসাধন করেন।
  • ইসলাম সাধনার প্রায় আট বছর পরে তাঁর মনে খ্রিস্টধর্ম সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসা জাগে। যিশুর পবিত্র স্বর্গীয় জীবন তাঁকে মুগ্ধ করে।

শ্রীরামকৃষ্ণের ধর্মমত হল:

(১) সব ধর্মই সত্য, যত মত তত পথ।

(২) যন্ত্র জীব, তত্র শিব—তাই জীবে দয়া নয়, শিব জ্ঞানে জীবের সেবা।

(৩) নিজের পছন্দমত কেটে-হেঁটে কোনো ধর্মমতের সাধনাতেই বাঞ্ছিত ফল লাভ করা যেতে পারে না, যা করণীয় তা গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে করা প্রয়োজন।

(৪) দ্বৈত, বিশিষ্ট হৈত এবং অদ্বৈত পরস্পর পরস্পরের পরিপুরক।

(৫) জ্ঞান, ভক্তি, কর্ম ও যোগ  (Hooghly District Details Description)

–এই চারটি পথই একক অথবা সমন্বিতভাবে সাধনের পথ।

তাঁর বিখ্যাত বাণী— ‘সৎ পথে থেকো’, ‘তোমাদের চৈতন্য হোক’, ‘যত মত তত পথ’। ইত্যাদি জনমানসে বিরাট অনুপ্রেরণার সঞ্চার করে। ১৮৮৪ সালে শ্রীরামকৃষ্ণ ‘চৈতন্যলীলা’ নাটক দেখতে প্রথম স্টার থিয়েটারে যান।

  • সেখানে বিনোদিনীর অভিনয় দেখে আপ্লুত হয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করে বলেন, তোর চৈতন্য হোক’।

হেমচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৯০৩) : গুলিটা। খ্যাতনামা কবি। কবিতার বিষয়বস্তু মূলত দেশপ্রেম।

  • উল্লেখযোগ্য রচনা—’চিন্তাতরঙ্গিনী’, ‘আশাকানন’ ইত্যাদি।

গণপতি চক্রবর্তী (১৮৫৮-১৯৩৯)

শ্রীরামপুর। বাংলাদেশের ‘আধুনিক জাদুচর্চার ( জনক’। প্রফেসর বোসের সার্কাসে খেলা দেখিয়ে জনপ্রিয় হন।

  • ‘ইলিউশন টি ‘ইলিউশন বক্স’, ‘কংস কারাগার’ তাঁর বিখ্যাত খেলা। গ্রন্থ—’যাদুবিদ্যা’।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৬-১৯৩৮)

দেবানন্দপুর। প্রখ্যাত সাহিত্যিক। ‘কথাশিল্পী। উপাধিতে ভূষিত।

  • প্রথম মুদ্রিত রচনা ‘মন্দির (১৯০৩)। এছাড়াও তিনি রামের সুমতি, মেজদিদি, দেবদাস (১৯১৭), বড়দিদি, চরিত্রহীন, অরক্ষণীয়া,
  • রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত (১৯১৬), লালু প্রভৃতি বিখ্যাত উপন্যাস ও গল্প লেখেন।
  • কিছুদিন হাওড়া জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন। রেঙ্গুনে থাকাকালীন চিত্রাঙ্কন করতেন। লিভার ক্যান্সারে প্রয়াত হন।

নন্দলাল বসু (১৮৮৩-১৯৬৬)

জেজুর-তারকেশ্বর। প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী। প্রথম জীবনে অবনীন্দ্রনাথের শিষ্য। শান্তিনিকেতন কলাভবনের অধ্যক্ষ। ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির -এর অলঙ্করণ করেন।

  • কংগ্রেস অধিবেশন উপলক্ষে বিখ্যাত ‘হরিপুরা পট’ অঙ্কন করেন। ‘উমার ব্যথা’, ‘উমার তপস্যা’, ‘পঙ্গু-পাণ্ডবের মহাপ্রস্থান’, ‘প্রত্যাবর্তন’ প্রভৃতি বিশিষ্ট শিল্পসৃষ্টি।
  • পদ্মবিভূষণ, দাদাভাই নৌরজী স্মৃতি পুরস্কার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিলিট প্রভৃতি উপাধিতে ভূষিত।

এস ওয়াজেদ আলি (১৮৯০-১৯৫১)

বড়জাতপুর। গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী ও রম্যরচনায় দক্ষ ছিলেন। ‘মাশুকের দরবার’, ‘প্রেমের মুসাফির’, ভারতবর্ষ’ প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

 অতুল্য ঘোষ (১৯০৯-১৯৬২) 

জেজুর। ১৯২১ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন।

  • ১৯৪২ সালে ভারতছাড়ো আন্দোলনে গ্রেপ্তার হয়ে পুলিশের অত্যাচারে মেরুদণ্ডে আঘাত লাগে ও একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়।
  • ১৯৫২ থেকে ১৯৬২ সংসদ সদস্য ছিলেন।
  • ১৯৫৭ সালে সংসদীয় রাজনীতি ছেড়ে দল সংগঠনে আত্মনিয়োগ করেন।
  • সুলেখক। ‘পত্রালী’, ‘কষ্টকল্পিত’, ‘নৈরাজ্যবাদীর দৃষ্টিতে গান্ধী’ ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত বই।

 আশাপূর্ণা দেবী (১৯০৯-১৯৯৫)

আদি নিবাস বেগমপুর। প্রখ্যাত সাহিত্যিক। ‘প্রথম ‘প্রতিশ্রুতি’, ‘সুবর্ণলতা’ ও ‘বকুলকথা’ তাঁর বিখ্যাত ট্রিলজি। রবীন্দ্র পুরস্কার, অ্যাকাডেমি পুরস্কার, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার প্রাপক।

এছাড়াও জেলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বরা হলেন প্যারীচাঁদ মিত্র (লেখক, সাংবাদিক। অপর নাম টেকচাঁদ ঠাকুর।

  • বিখ্যাত উপন্যাস আলালের ঘরে দুলাল, ১৮৫৭।
  • প্যারীচাদ মিত্রকে ‘ডিকেন্স অফ বেঙ্গল’ বলতেন রেভারেন্ড জেমস লঙ (যিনি নীল দর্পণ ইংরেজিতে অনুবাদ করেন),
  • ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় (বিখ্যাত গায়ক), বুলা চৌধুরী (সাঁতার),
  • ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় (ব্রাহ্মধর্মের অন্যতম সমর্থক),
  • দুর্গাদাস কোলে (স্বাধীনতা সংগ্রামী),
  • কানাইলাল দত্ত (বিপ্লবী),
  • সতীনাথ মুখোপাধ্যায় (গায়ক) প্রমুখ।

বর্তমান রাজ্য সরকারের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত (কৃষি বিপণন মন্ত্রী),

  • স্বপন দেবনাথ (ভূমি ও ভূমি সংস্কার প্রতিমন্ত্রী),
  • অসীমা পাত্র (পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান প্রতিমন্ত্রী),
  • ইন্দ্রনীল সেন (পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন, তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী) এই জেলার বাসিন্দা।

এক নজরে জেলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলী 

  • গঙ্গা-যমুনা-সরস্বতীর যুক্তবেণী উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদের প্রয়াগে, আর মুক্তবেণী বা মুক্তধারা হুগলি জেলার ত্রিবেণীতে।  (Hooghly District Details Description)
  • হুগলি জেলার ত্রিবেণী ভাগীরথী (হুগলি নদী), কুম্ভী ও সরস্বতীর মিলনস্থল ‘মুক্তবেণী’ নামেও পরিচিত। ত্রিবেণীকে পশ্চিমবঙ্গের ‘প্রয়াগরাজ’ ও বলা হয়। এই জেলা কৈবর্ত ও বাগদিদের আবাসস্থল।
  •  মুসলমান যুগে সাতগাঁও ও ত্রিবেণী ছিল শাসন কেন্দ্র।
  • ১৭৫৫ সালের ৮ অক্টোবর ডেনীয়রা চন্দননগরে কুঠি স্থাপন করে।
  • ব্যান্ডেলে পোর্তুগিজ, চুঁচুড়ায় দিনেমার (ডেনমার্ক) বা ডাচ এবং ওলন্দাজ (হল্যান্ড),
  • শ্রীরামপুরে ড্যানিশ ও চন্দননগরে ফরাসিরা উপনিবেশ স্থাপন করে।
  • ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে জসুয়া মার্শম্যান, উইলিয়াম ক্যারি ও উইলিয়াম ওয়ার্ড (‘শ্রীরামপুর ত্রয়ী’ বলে অভিহিত করা হত) দ্বারা উইলিয়াম ক্যারি রোডে সেনেট অফ শ্রীরামপুর কলেজ (১৮২৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায়) স্থাপিত হয়।
  •  চন্দননগরের গঙ্গার পাড় ‘স্ট্যান্ড’ নামে পরিচিত।
  • বাংলায় ওলন্দাজ বণিকরা প্রথম বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে—চুঁচুড়ায়।
  • পশ্চিমবঙ্গের প্রথম কাগজের কল শ্রীরামপুর মডার্ন পেপার মিল, স্থাপিত ১৮৩২ খ্রি.
  • ভারতের প্রথম চটকল (স্থাপিত ১৮৫৫) রিষড়ায়।
  • এশিয়ার বৃহত্তম কারখানা হিন্দুস্থান মোটরস্ (বর্তমানে বন্ধ);
  • ধনেখালি শাড়ি উৎপন্ন হয় হরিপাল, খানাকুল, আরামবাগে।
  • ধুতির জন্য বিখ্যাত ফরাসডাঙা। এখানকার ‘বাবনান চিকন’ ধুতি ভারত বিখ্যাত।
  • ত্রিবেণীর কাছে মগড়ায় ব্যাণ্ডেল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র (চালু ১৯৬৫ খ্রিঃ, ৪ সেপ্টেম্বর)। * ভারতের প্রথম বাংলা বই এখানে ছাপা হয়।
  • হ্যালহেডের ‘এ গ্রামার অব দ্য বেংগলি ল্যাংগুয়েজ’ ১৮১৮ সালে প্রকাশিত হয়। মার্শম্যান সম্পাদিত প্রথম বাংলা দৈনিক ও প্রথম বাংলা মাসিক ‘দিকদর্শন’ প্রকাশিত এই জেলা থেকেই।
  • এই জেলার বিখ্যাত গ্রন্থাগার জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরি। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ১৪ এপ্রিল জমিদার জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
  • হুগলির সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়-এর ‘ডন সোসাইটি’ ব্রিটিশ ভারতে বিলাতি বয়কটের ডাক দেয়। বিপ্লবীদের বোমা তৈরির কেন্দ্র ছিল চন্দননগর।
  •  হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় হংসেশ্বরীর মন্দির, অনন্ত বাসুদেবের মন্দির, আঁটপুরে রাধাগোবিন্দের মন্দির,

ব্যাণ্ডেলে ডোরিক স্থাপত্য

  • ব্যাণ্ডেলে ডোরিক স্থাপত্যে পর্তুগিজদের নির্মিত ব্যান্ডেল চার্চ (স্থাপিত ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে); আর্মানি গির্জা ও হুগলিতে মহম্মদ মহসীনের ইমামবাড়া আকর্ষণীয় পুরাতত্ব।
  •  হুগলি জেলার রাজহাটে দলে দলে ময়ূর ঘুরে বেড়ায়।
  •  হুগলি আইয়া গ্রাম রাবড়ির জন্য বিখ্যাত।
  • হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইন ও মেইন লাইন এই জেলার মধ্য দিয়ে প্রসারিত।
  • হুগলির ইমামবাড়া হুগলি নদীর তীরে ১৭১৭ সালে নির্মাণ করেন মহম্মদ আগা মোতাহার।
  •  তিনি প্রচুর ধন-সম্পত্তির মালিক ছিলেন। পরবর্তীতে এটি ধ্বংস হয়ে গেলে তাঁরই উত্তরাধিকার মুহম্মদ মহসিন এর পুনর্নির্মান শুরু করেন।
  • কিন্তু তাঁর অকস্মাৎ মৃত্যুতে এর কাজ থমকে যায়। সরকার এটি নির্মাণের দায়িত্ব নেয় এবং নির্মাণের দায়িত্ব দেয় বিজ্ঞান ও জ্যামিতিতে পারদর্শী সৈয়দ কেরামত আলিকে।
  • তাঁর তত্ত্বাবধানে ১৮৪১ সালে নির্মাণ শুরু হয় এবং নির্মাণ শেষ হয় ১৮৬১ সালে।
  • স্বাধীনতার পরেও তিনবছর চন্দননগর ভারতের অধীনে ছিল না। ফরাসীদের অধিকৃত কলোনী ছিল। ১৯৫০ সালের ২ মে চন্দননগর শহরটি ফরাসীদের নিকট হতে ভারতের।

অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ১৯৫৪ সালের ২ অক্টোবর চন্দননগর হুগলি জেলার সাথে যুক্ত হয়।

  •  শ্রীরামপুরের সেন্ট ওলাভ গির্জা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক স্থাপত্য সংরক্ষণের জন্য ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ‘ইউনেস্কো এশিয়া-প্যাসিফিক পুরস্কার’ লাভ করে।

এই পুরস্কার প্রদানের লক্ষ্য বিভিন্ন স্থানে অনাদরে পড়ে থাকা জীর্ণ স্থাপত্যকে সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যাক্তিকে উৎসাহিত করা।  (Hooghly District Details Description)

  • ২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হুগলি নদীর ওপর নৈহাটি ও ব্যান্ডেলের মাঝে জুবিলি সেতুর পাশে একটি নতুন রেলসেতুর উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজেন গোহাঁই।

সেতুটির নামকরণ হয় ‘সম্প্রীতি সেতু”।

এটি ৪১৫ মিটার লম্বা দেশের প্রথম স্টিল কন্টিনিউয়াস ওপেন ওয়েব গার্ডার ব্রিজ।

  •  হুগলিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে চালু হল রানি রাসমণি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়। সিঙ্গুর সরকারি জেনারেল ডিগ্রি কলেজের ক্যাম্পাসে এর কাজ শুরু হবে। এর প্রথম উপাচার্য নিযুক্ত হয়েছেন আশুতোষ ঘোষ।

হুগলি শিল্পাঞ্চলের কিছু কথা

ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও পশ্চিমবঙ্গের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাগুল হল হুগলি শিল্পাঞ্চল।

প্রধান প্রধান শিল্প 

কাগজ কল, টিস্যু কাগজ (ত্রিবেণী), বস্ত্র শিল্প, রেল ইঞ্জিন মেরামতির কারখানা (লিলুয়া), মুরগির হ্যাচারি (আরামবাগ), রাসায়নিক সামগ্রী, ইস্পাত কারখানা, দুধ ও ঔষুধের কারখানা ইত্যাদি।

  • হুগলি শিল্পাঞ্চলটি ভারতের প্রাচীনতম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পাঞ্চল।
  • নিম্ন গাঙ্গেয় সমভূমির দক্ষিণ অংশে হুগলি নদীর দুই তীর জুড়ে এই হুগলি শিল্পাঞ্চল বিরাজ করছে।
  • হুগলি শিল্পাঞ্চলটি গঠিত পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতাসহ হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়া জেলার কিছু অংশ নিয়ে।
  • হুগলি নদীর বাঁ-তীরে উত্তরে কল্যাণী থেকে দক্ষিণে বিড়লাপুর এবং হুগলি নদীর ডান তীরে উত্তরে ত্রিবেণী থেকে দক্ষিণে উলুবেড়িয়া পর্যন্ত এই শিল্পাঞ্চল বিস্তৃত।
  • এই শিল্পাঞ্চলের কেন্দ্রবিন্দু কলকাতা মহানগরী।

হুগলি শিল্পাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য শিল্প 

হুগলি শিল্পাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য শিল্পগুলির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল পাটশিল্প।

  • এছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প (ব্রিটানিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং কোং, বেহালা) – ভারী যন্ত্রপাতি, রেল ওয়াগন ও বস্ত্রশিল্পের যন্ত্রপাতি।
  • টেক্সম্যাকো (বেলঘরিয়া) – ভারী যন্ত্রপাতি, রেল ওয়াগন ও বস্ত্রশিল্পের যন্ত্রপাতি।
  • জেসপ অ্যান্ড কোং (দমদমে )- রেল ওয়াগন, ক্লেন এবং কাগজ তৈরির মেশিন ।
  • ন্যাশনাল ইনস্ট্রমেন্টস (যাদবপুর) – জরিপ ও অঙ্কন সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি এবং ক্যামেরা।
  • ইলেক্ট্রনিক্স ও কম্পিউটার শিল্প; বস্ত্রশিল্প (হুগলি শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে),
  • কাগজ শিল্প (দি টিটাগড় পেপার মিলস, সুপ্রিম পেপার মিলস, ইন্ডিয়ান পেপার পাল্প, ত্রিবেণী টিসু প্রভৃতি),
  • জাহাজ নির্মাণ শিল্প (গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স : এখানে যুদ্ধ জাহাজ, ড্রেজার ও গাধাবোট তৈরি হয়); রাসায়নিক শিল্প (রিষড়া), রঙ শিল্প (বার্জার পেন্ট শালিমার পেন্টস, আই.সি.আই. প্রভৃতি),
  • ঔষধ শিল্প (বেঙ্গল কেমিক্যাল, ইউনিয়ন ড্রাগ, দেজ মেডিক্যালস), পশম শিল্প, কাঁচ শিল্প (ইন্দোআশাহি : সোদপুর);  (Hooghly District Details Description)
  • চর্মশিল্প (বাটানগর, বানতলা, ট্যাংরা প্রভৃতি);
  • বিস্কুট শিল্প (ব্রিটানিয়া, প্রিয়া প্রভৃতি),
  • ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি প্রভৃতি শিল্পে হুগলি শিল্পাঞ্চল সমৃদ্ধ।

Read More:- Kotak Mahindra Recruitment 2022 | Notification Out For Assistant Acquisition Manager Vacancies | Apply Online

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles